মোঃ নোমান সরকার
( বন্দী রাজকবিকে রাজ সভায় রাজার সামনে দাঁড় করানো হলো। রাজসভায় মন্ত্রীরা তা দেখে নিজেদের মধ্য কথা বলাবলি করল। সবাই অবাক বিস্ময়ে দেখছেন রাজকবিকে। লজ্জাহীন চোখে তাকিয়ে আছে রাজকবি! তাদের কাছে তাই মনে হল। রাজা হাত তুলতেই সবাই থামল। একেবারে শব্দবিহীন পরিবেশ হয়ে গেল। সবাই ভাবছে এত বোকা কবি হয়! এত বোকা মানুষ হয়!)
রাজা খুব আনন্দ পাওয়া গলায় বলল ,’’ এসো ,এসো কবি ! তুমি নাকি ভাব নিজেকে রবি! এখন গেল তো সবই। এই কে আছিস , নিয়ে আয় কবির যত কবিতার ছবি! ‘’
কবি হাসলেন। যেন কবি আনন্দে ভাসলেন। তাই দেখে রাজা সিংহাসন ছেড়ে আসলেন। কাছে এসে কাশলেন।
রাজার অবাক বিস্ময়ে বলেন ,তার জোড়া ভ্রু উপরে তুলে,’’ তোমাকে চড়াব শূলে। প্রজাদের উসকে দিবার তুমি যে আছ মুলে! হায় ! হল কি তোমার? রাজার কথা গেলে ভুলে! কি করে তুমি গেলে দুলে আর ভুলে? বিদ্রোহীরা কি নিয়েছিল, তোমায় তুলে? এখন সবইতো গেল খুলে।”
রাজা থামলেন, অনেক ঘামলেন। একটু থেমে বললেন, ”কত কিনা দিয়েছি তোমায় ? আজ সেই তুমি , প্রজাদের বানালে বোমায় ! দিলে একি হে রাজকবি ? যা চাওনি তাও দিয়েছি সবই ! তবে তুমি কি দিলে আমায় ? বল , বল কি দেইনি তোমায়? সম্মান, শ্রদ্ধা, স্নেহ, মায়া, ভালোবাসা, সব সবই দিয়েছি। আর তুমি কেড়ে নিতে চাও আমার ভূমি! প্রজারা তোমার সাথে আর তুমিও প্রজাদের সাথে মিলেমিশে নিতে চাও আমার বাহাদুরি! রাজ্য আর রাজ্যত্ব, কবি সাহস তোমার কত বড়!”
কবি চুপ। তাই দেখে রাজা খেপলেন খুব। রাজা দিল এক হুলুংকার ! এক হাতে ধরা আছে নিজের গলার মালায় তার। অন্য হাতে ছিড়ে নিলেন কবির গলার হার। যেন আজ কবির নেই ছাড় , কাটবেন ঘাড়। নেই ,আর কোন নিস্তার নেই তার।
এমনি সময় পহরী কবির কবিতা নিয়ে এলো। রাজসভার সবাই মনে মনে বলাবলি করল ,গেল গেল সবইতো গেল। রাজকবির সবই ভুলই ছিল। রাজ্যটারে কবি কিবা দিল ! মান সম্মান সবই গেল ! নিল না এবার সবই, সব তো রাজা কেড়ে নিলো। গেল না সব? সবই তো গেলো! বোকা,কবি তুমি মহাবোকা !
রাজা বলল ,”মন্ত্রী ! পড়ো দেখি, লিখে ছাই তামাশা কিনা কি ?”
মন্ত্রী পড়তে শুরু করল রাজ কবির বিদ্রোহের কবিতা।